আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার সুবিধার্থে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা পাঁচ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইতোমধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। একইসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়াকে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) ব্যাংকটির জরুরি সভা থেকে তাকে আগামী তিন মাসের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এমডিদের বাধ্যতামূলক ছুটির তালিকায় আরও চার ব্যাংক রয়েছে। এগুলো হলো– ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এসব ব্যাংকের এমডিদের ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে। সেখানে এসব ব্যাংকে অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে এস আলম ঘনিষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক শনিবার পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববার (৫ জানুয়ারি) এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদের জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলোর উচ্চ পদে শিগগিরই পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ। সরকার পরিবর্তনের পর গত ১ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মান্নানকে। ২০১৭ সালে এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের সময় আব্দুল মান্নানকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে পদত্যাগ করানো হয়।
অপর একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানান, যেসব ব্যাংকে দুর্নীতি হয়েছিল এবং সেসময় যেসব এমডি দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের কিছুদিনের জন্য ছুটিতে রাখা হবে। যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা সংস্থাগুলো নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে। ব্যাংক সংস্কারের জন্য গঠিত ব্যাংকিং ট্রান্সফরসের পরামর্শে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এইচ